দুর্বৃত্তদের আগুনে সর্বস্বান্ত, ৬ সন্তান নিয়ে খোলা আকাশে নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন খোরশেদ আলমের পরিবার
মোহাম্মদ রাশেদ
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের রুহুল্লার ডেবা গ্রামে এক মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত ১২ জুন ২০২৫ইং তারিখ বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা খোরশেদ আলমের পরিবারের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগুনে তার ঘরের রান্নাঘরসহ একাংশ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।
ঘটনার সময় পার্শ্ববর্তী বাড়ির মোহাম্মদ মামুন আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে এগিয়ে এসে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তিনি মোবাইল ফোনে খোরশেদ আলম ও প্রতিবেশী হেলাল উদ্দিনকে বিষয়টি জানান। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় অনেক চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে রান্নাঘরের সব আসবাবপত্র, কাপড়চোপড় এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, এই অগ্নিসংযোগ পূর্ব শত্রুতার জেরেই ঘটানো হয়েছে। কারণ, ঘটনার দিন খোরশেদ আলমের পুরো পরিবার তার স্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাড়ির বাইরে ছিলেন, এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়েছে বলে তাদের ধারণা।
উল্লেখ্য, মাত্র এক মাস আগেও একই বাড়িতে রাতের বেলায় অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সে সময় পরিবারের সদস্যরা ঘরে উপস্থিত থাকায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এবারের হামলায় বাড়ির একটি অংশ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।
বর্তমানে ৬ সন্তানসহ চরম দুর্দশায় খোরশেদ আলমের পরিবার এই ঘটনায় খোরশেদ আলমের স্ত্রী ও ৬টি সন্তান বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দগ্ধ হৃদয়ে খোরশেদের স্ত্রী জানান,
“রান্না করার মতো একটা হাঁড়িও আমাদের কাছে নেই। যে কাপড় পরে আছি, সেটাই এখন একমাত্র সম্বল। বাচ্চাদের নিয়ে এই খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা—সব কিছুই এখন এক বিভীষিকা। আমার ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না, পড়ার মতো পরিবেশ নেই। আমি প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি—আমার এই ছায়াহীন ঘরটিকে আবার মাথা গোঁজার মতো করে দিন।”
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই ধরনের পরিকল্পিত হামলা সমাজের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তারা দ্রুত ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন।
এদিকে এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা দ্রুত এই পরিবারের জন্য জরুরি সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং হোস্ট কমিউনিটিতে কর্মরত বিভিন্ন এনজিও সংস্থাগুলোর কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তাদের যেন জরুরি ভিত্তিতে বসতঘর পুনঃনির্মাণ, খাদ্য, পোশাক, ও শিক্ষাসামগ্রীর সহায়তা প্রদান করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোহাম্মদ রাশেদ
যোগাযোগঃ 01332784449
ইমেইলঃ ukhiaprotidin@gmail.com
© সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত উখিয়া প্রতিদিন-২০২৫ ইং