দেশের ৮৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। তাছাড়া ৩৪ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠান কোনো সহজ ঋণ পান না। তাছাড়া দেশের শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি আশঙ্কাজনক পর্যায়ে ঠেকেছে। ২০১৩ সালে শিল্পখাতের উৎপাদন প্রবৃদ্ধি ছিল ১০০ শতাংশ, ২০২৪ সালে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশে।
বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত অর্থনৈতিক শুমারিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
শুমারির প্রাথমিক তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪ সালে দেশে মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টিতে, যা ২০১৩ সালে ছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি।
এ হিসাবে ১১ বছরে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৯টি বা ৫১ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে। এর প্রভাবে শিল্প খাতের অবদান ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশে।
অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রতিবেদনে এ চিত্র ফুটে উঠেছে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস সম্মেলনকক্ষে শুমারির প্রাথমিক ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভাপতি ড. কে এস মুর্শিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বক্তব্য দেন প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার।
বিবিএসের হিসাবে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে উৎপাদন খাতে মোট উৎপাদনের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৯৭ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। সর্বশেষ হিসাবে গত অর্থবছরে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ লাখ ৩২ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকায়। ১১ বছরে উৎপাদন খাতের মোট উৎপাদনমূল্য প্রায় ৫ দশমিক ৭৫ গুণ বেড়েছে।
এক্ষেত্রে সরকার প্রতিবছর গড়ে ১৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনাভাইরাসের প্রভাবে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ধস নামার বছরেও এই খাতে ৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছিল।
এছাড়া প্রতিবছরই উৎপাদন খাতে ডাবল ডিজিট, এমনকি কোনো কোনো বছর ১৮ শতাংশ ছুঁইছুঁই প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে। এই সময়ে মোট জিডিপিতে উৎপাদন খাতের অবদান ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৩ দশমিক ১৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলেও দাবি করে হাসিনা সরকার।
উৎপাদন খাতের হাত ধরে শিল্পখাতে বছরের পর বছর দেখানো জিডিপি প্রবৃদ্ধির এ হিসাব মিলছে না বিবিএস পরিচালিত অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪-এর প্রাথমিক ফলাফলে।